প্রথম ১০০ দিন শুধু শিখবো দক্ষ ফ্রিলান্সার হবো। গ্রাফিক্স ডিজাইন টিউটোরিয়ালের-৬ষ্ঠ পর্বে সবাইকে স্বাগতম , আশা করি গত পর্বের টিউটোরিয়াল গুলো বুঝতে পেরেছেন । কোন অংশে বুঝতে না পারলে অবশ্যই কমেন্টে মাধ্যমে আমাদের জানাবেন। চলুন শুরু করি ১০০ দিনের আজকের পর্ব – ০৬
Photoshop এ Color Mode ও কী কী এবং কোন Color ধারা কী করা যায়।
Photoshop এ Color Mode পাঁচটি ঃ
1. Bitmap
2. Grayscale
3. RGB Color
4. CMYK Color
5. Lab Color
Bitmap : 100% White and 100% Black এর আলাদা আলাদা color. ইহা ব্যবহৃদ হত আগের Studio তে।
Grayscale : সাদা কালো ছবির জন্য এই মুড ব্যবহার করা হয়।
RGB Color : RGB এর meaning হচ্ছে Red, Green, Blue. ওয়েব বা যন্ত্রের জন্য এই মুড ব্যবহার করা হয়।
CMYK Color : CMYK এর meaning হচ্ছে Cyan, Magenta, Yellow and key (Black)
Lab Color : ছবি ওয়াশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
বিটম্যাপ বনাম ভেক্টর
ফটোশপ ব্যবহারের আগে প্রয়োজনীয় কিছু তাত্ত্বিক বিষয় জেনে নিন। কম্পিউটারে যে ইমেজগুলি আমরা দেখে থাকি সেগুলি দুধরনের হয়, বিটম্যাপ এবং ভেক্টর। ফটোশপ কাজ করে বিটম্যাপ ইমেজ নিয়ে অন্যদিকে ইলাষ্ট্রেটর, কোরেল ড্র ইত্যাদি সফটঅয়্যার কাজ করে ভেক্টর নিয়ে। বিটম্যাপকে রঙতুলি দিয়ে আকা ছবি এবং ভেক্টরকে পেনসিলে আকা ছবির সাথে তুলনা করতে পারেন (যদিও পার্থক্য রয়েছে অনেক বিষয়ে)। সরল ভাষায় বিটম্যাপে একটি দাগ দেয়ার পর আপনি সেটা পরিবর্তন করতে পারেন না, ভেক্টরে তাকে বাকানো থেকে শুরু করে সবধরনের পরিবর্তন করা যায়।
বিটম্যাপ ছবি তৈরী হয় পিক্সেল নামের ছোট ছোট ডট দিয়ে। খবরের কাগজের ছবি ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন সেগুলিও ছোট ছোট ডট দিয়ে তৈরী। ডটের ঘনত্ব কম হলে সেগুলি দেখা যায়, বেশি হলে ডট বোঝা যায় না। এই ঘনত্ব যত বেশি ছবির মান তত ভাল।
কম্পিউটার মনিটর কিংবা অন্য যে কোন ডিসপ্লেতে ছবির মাপ হিসেব করা হয় পিক্সেল দিয়ে। আপনার মনিটরের রেজুলুশন যদি ১০২৪-৭৬৮ হয় তাহলে ১০২৪-৭৬৮ পিক্সেলের একটি ছবি ১০০% ভিউতে পুরো স্ক্রিন জুড়ে থাকবে। প্রিন্টের সময় হিসেব করা হয় ইঞ্চি অথবা সেন্টিমিটারে। ফটোশপে যে কোনটি হিসেব করে ছবির মাপ ঠিক করা যায়, যদিও মনিটরে সবসময়ই দেখা যাবে পিক্সেল হিসেবে।
ফটোশপের নিজস্ব ফাইল ফরম্যাপ PSD (ফটোশপ ডকুমেন্ট)। অর্থাত সরাসরি সেভ কমান্ড দিলে এই ফরম্যাটে সেভ হবে। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে ভাল মান পাওয়া যায়। অসুবিধে হচ্ছে এটা ব্যবহারের জন্য ফটোশপই প্রয়োজন হয় এবং ফাইল সাইজ খুব বড় হয়।
সব যায়গায় ব্যবহারের জন্য সাধারন ফরম্যাট জেপেগ (JPG, JPEG)। এতে ফাইলসাইজ সুবিধেমত ছোট করা যায়। অন্য কম্পিউটার, ওয়েব, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদির জন্য উপযোগি। সেভ এ্যাজ কমান্ড দিয়ে এই ফরম্যাটে সেভ করতে হয়।
জেপেগ ফরম্যাটে ছবির মান নষ্ট হয় বলে প্রিন্টের জন্য ব্যবহার করা হয় না। ফটোশপের করা ডিজাইন যদি প্রিন্টের জন্য দিতে হয় তাহলে সরাসরি ফটোশপ অথবা TIFF অথবা অন্য কোন সুবিধেজনক ফরম্যাট ব্যবহার করুন।
বিটম্যাপে ফটোগ্রাফের মত নানারঙা ছবি পাওয়া যায় যা ভেক্টর ফরম্যাটে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে বিটম্যাপের সমস্যা হচ্ছে বড় করলে ভেঙে যায় (প্রচলিত ভাষায় ছবি ফেটে যাওয়া)। ভেক্টরে সেটা হয় না। যত বড়ই করা হোক না কেন, মান একই থাকে। একাজে সহায়তা করার জন্য এডবির ভেক্টর ভিত্তিক সফটঅয়্যার ইলাষ্ট্রেটর ব্যবহার করা হয়।
বাস্তব উদাহরন দেখা যাক। আপনি একটি ভিজিটিং কার্ড তৈরী করছেন ফটোশপে। পেছনের আকর্ষনীয় ছবি এবং তার ওপর লেখার সবই ফটোশপের। প্রিন্টের জন্য এটা ব্যবহার করলে যদি সেই কম্পিউটারে নির্দিষ্ট ফন্ট না থাকে তাহলে ফন্ট পরিবর্তন হবে, ফলে আগের সৌন্দর্য থাকবে না। আবার এই সমস্যা এড়াতে ফন্টকে যদি ইমেজে পরিনত করেন তাহলে ভাঙা দেখাবে। ছোট লেখা পড়তে সমস্যা হবে।
এর সমাধান ভেক্টর। সাধারনত ডিজাইনাররা ছবির কাজ করেন ফটোশপে, লেখার কাজ করেন ইলাষ্ট্রেটরে। এথেকে ধরে নিতে পারেন, ইলাষ্ট্রেটরের কাজ ফটোশপে ব্যবহার করা যায়, ফটোশপের কাজ ইলাষ্ট্রেটরে ব্যবহার করা যায়। এক যায়গায় পরিবর্তন করলে সাথেসাথে আরেক যায়গায় পরিবর্তন হয়।
সাধারনভাবে ব্যবহৃত বিটম্যাপের ফাইল এক্সটেনশনগুলি হচ্ছে BMP, JPG, JPE, TIFF, PSD, PCD, PNG, GIF, TGA ইত্যাদি।
আর ভেক্টরের জন্য ফাইল এক্সটেনশন হচ্ছে DWG, AI, CDR, EMF, WMF ইত্যাদি।
ফটোশপ কোন ফরম্যাটে সেভ করবেন সেটা নির্ভর করবে কোথায় ব্যবহার করা হবে তার ওপর। সাধারনভাবে পুনরায় কাজ করা প্রয়োজন হলে অবশ্যই ফটোশপের নিজস্ব ফরম্যাট, মনিটর বা টিভিতে দেখার জন্য JPG, এনিমেশন ভিডিও এডিটিং কাজে TGA, JPG, ওয়েব এর জন্য JPG, GIF অথবা PNG ব্যবহার করা হয়।
আজ এই পর্যন্ত শেষ করলাম, কিন্তু একেবারেই শেষ করছি না আসছি আগামী পর্বে আবারো নতুন গুরুত্বপূর্ণ টিউটোরিয়াল নিয়ে। সেই পর্যন্ত ভাল থাকবেন সবাই।