জাপান ও বাংলাদেশের পতাকা একই ধাঁচের হওয়ার পেছনে সরাসরি কোনো সম্পর্ক না থাকলেও একটা ক্ষীণ যোগসূত্র তো আছেই।
- বাংলাদেশের পতাকার লাল বৃত্তটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য কে সূচিত করে, যা পাকিস্তানের থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর বাংলাদেশের ভূমিতে উদিত হয়েছিল। এই লাল রং স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় লক্ষ লক্ষ শহীদ মানুষদের রক্তের প্রতীক হিসেবে ভাবা হয়। সবুজ রঙ বাংলাদেশের স্নিগ্ধ, সুফলা, চিরহরিৎ দেশমাতৃকাকে তুলে ধরে।
- জাপানের পতাকার লাল বৃত্ত জাপানের সূর্যোদয় কে সূচিত করে। জাপানকে বলা হয় সূর্যোদয়ের দেশ । ভৌগলিক অবস্থানের কারণে জাপান থেকে সর্বপ্রথম সূর্যোদয় দেখা যায়। জাপানিরা সেই কথা মাথায় রেখে নিজেদের পতাকায় লাল বৃত্ত অঙ্কন করে।
সুতরাং, উভয় ক্ষেত্রেই লাল বৃত্ত ভোরবেলা (dawn) নির্দেশিত করে। বাংলাদেশের এই ভোর হল স্বাধীনতার নতুন দিন, নতুন ভোর। আর জাপানের ক্ষেত্রে এই ভোর হল নতুন এক সুন্দর দিনের আরম্ভ।
বাংলাদেশ হল “বাংলার দেশ” (country of Bengal)। তিনজন বাঙালি, যাঁরা জাপান ও বাংলাদেশ, উভয়ের সঙ্গেই মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তাঁদের কথা না বললে চলে না। এঁরা হলেন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (দেশপ্রেমী ও সাহিত্যে নোবেল প্রাপক), সুভাষ চন্দ্র বসু (ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী) ও রাধাবিনোদ পাল (বিচারক তথা স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা)।
- তেনশিন ওকাকুরা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁর আমন্ত্রণে বেশ কয়েকবার জাপান যান রবীন্দ্রনাথ।
- সুভাষ এর সঙ্গে জাপানের মিত্রতা সারা বিশ্বে পরিচিত। ভারত স্বাধীন হওয়ার পেছনে যে জাপানিদের একটা বড়ো অংশ সাহায্য করেছিল, তা কেবল সুভাষ এর জন্যই।
- বিচারক হিসেবে রাধাবিনোদ পাল জাপানি সংগ্রামে জাপানিদের নির্দোষ হিসেবে ঘোষণা করেন। তাছাড়া জাপানিদের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর পরোক্ষ অবদান তো ছিলই।
তাই জাপানিদের পতাকার আদলে বাংলাদেশের পতাকা নির্মিত হয়েছে, এ কথা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
সূএ ইন্টারনেট