Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/sattacad/public_html/blog/wp-config.php on line 101
মাইগ্রেনের ব্যথা: কী খাবেন, কী খাবেন না | স্যাট একাডেমী ব্লগ

মাইগ্রেনের ব্যথা: কী খাবেন, কী খাবেন না

মাথা ব্যাথা রোগে প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই ভুগে থাকেন। কিন্তু বর্ষায় বাড়াবাড়ি হয় যে মাথা ব্যাথার তা হলো মাইগ্রেন৷ মাইগ্রেন কোনও সাধারণ মাথা ব্যাথা নয় যে একটি ক্যালপল বা স্যারিডনেই কমে যাবে৷ বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১১ শতাংশ বয়স্ক মানুষ মাইগ্রেনজনিত মাথাব্যথায় ভোগেন। মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যেকোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অনেক সময় পুরো মাথায় ব্যথা করে। এতে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। মাথাব্যথার সঙ্গে বমি এবং বমি বমি ভাব রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম হতে পারে।

রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় অন্য সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাইগ্রেন একধরনের প্রাইমারি হেডেক, যা নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। চিকিৎসকের অধীনে এবং নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা উচিত। মাইগ্রেনের ব্যথা চোখের কোনো সমস্যার জন্য হয় না।

কেন এবং কাদের বেশি হয়?

মাইগ্রেন কেন হয় তা পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এটি বংশগত বা অজ্ঞাত কোনো কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়। নারীদের ঋতুস্রাবের সময় মাথাব্যথা বাড়ে। চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা, দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে বাড়িয়ে দেয়।

লক্ষণ

মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথাব্যথা, বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথাব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে| চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। শব্দ ও আলো ভালো লাগে না। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ ও আলোয় ব্যথা বেড়ে যেতে পারে|

যেসব খাবার মাইগ্রেনে প্রতিরোধ করে

ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার। যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক। বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ইত্যাদিও ব্যথা উপশম করে। সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন। পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। আদার টুকরো বা রস দিনে দুবার জিঞ্চার পাউডার পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।

এড়িয়ে চলুন

১. চা, কফি ও কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, দই, দুধ, মাখন, টমেটো ও টক জাতীয় ফল খাবেন না

২. গম জাতীয় খাবার, যেমন রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি

৩. আপেল, কলা ও চিনাবাদাম

৪. পেঁয়াজ

তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একটা ডায়েরি রাখা। যাতে আপনি নোট করে রাখতে পারেন কোন কোন খাবার ও কোন কোন পারিপার্শ্বিক ঘটনায় ব্যথা বাড়ছে বা কমছে। এ রকম এক সপ্তাহ নোট করলে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন। তবে ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ঠিক ভাবে চিকিৎসা করলে আর নিয়ন্ত্রণে থাকলে ভালো হয়। যে কারণ গুলোতে মাইগ্রেন এর ব্যথা বাড়ে সেই কারণগুলো বুঝে চললেই আপনি ভালো থাকবেন।

মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাওয়ার কিছু উপায়

১. মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক এবং প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।

২. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।

৩. অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।

৪. কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।

৫. উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।

৬. বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।

৭. মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.