বিশ হাজার টাকায় সরকারি ভাবে জর্দানে কর্মী নিয়োগ। শেয়ার করবো সবার জন্য।

যাঁরা জর্দানে যেতে চান, তাঁরা মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচে সরকারী তত্তাবদানে কর্মী হিসেবে যেতে পারবেন। তবে আনুসাঙ্গিক আরও কিছু খরচ হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশি পোশাক শ্রমিকদের জন্য জর্দানের পাঁচ গামেন্টস কোম্পানি নিয়ে এসেছে চাকরির এক সুবর্ণ সুযোগ। যেখানে সরকারিভাবে স্বল্প খরচে (সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা) যে কেউ লুফে নিতে পারেন এ সুযোগ। থাকতে হবে শুধু গার্মেন্টসে কাজ করার একটু অভিজ্ঞতা আর নিজের পাসপোর্ট। এ চাকরিতে রয়েছে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন। সঙ্গে আছে অতিরিক্ত কাজের জন্য আরো ৫ হাজার টাকা আয়ের সুযোগ। বেতন-বোনাসের পাশাপাশি থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থাও করবে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।
এরইমধ্যে কয়েক দফা লোক পাঠানো হয়েছে। আরো পাঠানো হবে বলে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) সূত্রে জানা গেছে।
জর্দানের কয়েকটি কোম্পানি বলতে গেলে তাদেরই খরচে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক লোক নিচ্ছে। জর্দানের পাঠানোর এ প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে। এর জন্য একজন আগ্রহী প্রার্থীর পাসপোর্ট আর অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। বাকি সব বোয়েসেল করে ফেলবে।

জর্দানের পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্লাসিক ফ্যাশন অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি, সেঞ্চুরি মিরাকেল, রেইনবো টেক্সটাইল, গ্যালাক্সি অ্যাপারেল ও এটাটেকস ফরেন ট্রেড বাংলাদেশ থেকে এসব কর্মী নেবে। বিভিন্ন ধাপে মোট ১৪৪৭ জন নারী কর্মী পাঠানো হবে জর্দানে। যাদের মধ্যে মেশিন অপারেটর পদে ১২৭১ জন, লিংকিং অপারেটর পদে ১২৫ জন, সুইং মেশিন অপারেটর পদে ৫০ জন, ওয়েলফেয়ার অফিসার পদে একজন।

কোম্পানির প্রতিনিধি ও বোয়েসেলের কয়েকজন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টায় রাজধানীর মিরপুর-২ বাংলাদেশ-জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও মিরপুর-১ দারুস সালাম রোড বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে বাছাই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ শেষে দেড় মাসের মধ্যে জর্দান যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে বাংলাদেশিদের।

আগ্রহী প্রার্থীর কোন কাগজপত্র না থাকলে শুধু পাসপোর্ট নিয়েই এখানে হাজির হলে বাকি সব পরবর্তীতের নেওয়ার সযোগ থাকবে। তবে কোম্পানি ভেদে কাগজপত্র ও অভিজ্ঞতার প্রমান চাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাছাই পরীক্ষায় হাজির হওয়ার দিন সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে জীবনবৃত্তান্ত, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে চার কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, মূল পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টের ছবিযুক্ত অংশের এক সেট রঙিন ও চার সেট সাদা-কালো ফটোকপি। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ (যদি থাকে), বর্তমানে কর্মরত অফিসের পরিচয়পত্র, পরিচয়পত্র না থাকলে হাজিরা কার্ড।

বয়স ও অভিজ্ঞতা
মেশিন অপারেটর পদে নিয়োগের অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। থাকতে হবে যেকোনো তৈরি পোশাক কারখানায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা। লিংকিং অপারেটর পদে আবেদন করতে এ পদেও চাওয়া হয়েছে একই যোগ্যতা। ওয়েলফেয়ার অফিসার পদে স্নাতক হতে হবে। সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলা, লেখা ও কম্পিউটারে দক্ষতা থাকা চাই। সব পদে বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩০-এর মধ্যে। প্রার্থীকে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী হতে হবে এবং থাকতে হবে পাসপোর্টের মেয়াদ।

মৌখিক পরীক্ষায় যোগ্য হওয়ার পর
মৌখিক পরীক্ষায় বাছাইয়ে পর নির্বাচিত হলে সেদিনই জানিয়ে দেওয়া হবে পরবর্তী করণীয়। এরপর প্রার্থীকে মেডিক্যাল টেস্ট ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে। মেডিক্যাল টেস্ট ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের বিষয়ে জানিয়ে দেবে বোয়েসেল। মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট, ফিঙ্গারপ্রিন্টের কাগজসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিতে হবে বোয়েসেল অফিসে। পরবর্তী সব কার্যক্রমের বিষয়ে প্রার্থীর মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। বৈধ পথে লেনদেনের জন্য জর্দানে যাওয়ার আগে প্রার্থীকে নিজ নামে নির্ধারিত ব্যাংকে হিসাব খুলতে হবে।

খরচ
নির্বাচিত প্রার্থীকে বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য সব খরচ বাবদ ওয়েলফেয়ার অফিসার পদে ৫২২৫০ টাকা এবং মেশিন অপারেটর পদের জন্য ১৭৭৫০ টাকা বোয়েসেল অফিসে পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। এছাড়া মেডিক্যাল ফি বাবদ এক হাজার টাকা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বাবদ ২২০ টাকা গুনতে হবে। তবে ক্লাসিক ফ্যাশন অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচিত প্রার্থীর বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য খরচ কোম্পানির পক্ষ থেকে বহন করবে। প্রার্থীকে শুধু মেডিক্যাল ফি ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের ফির খরচ বহন করতে হবে।

চাকরির মেয়াদ ও কর্মঘণ্টা
বোয়েসেল সূত্র জানায়, চুক্তি অনুসারে প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য নেওয়া হবে এসব কর্মী। চাইলে বাড়ানো যাবে চুক্তির মেয়াদ। একজন কর্মীকে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করতে হবে। সপ্তাহে এক দিন ছুটি। চাইলে অতিরিক্ত সময় কাজ করা যাবে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার মজুরি পাওয়া যাবে জর্দানের শ্রম আইন অনুসারে।

সুযোগ-সুবিধা
নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতনের সঙ্গে থাকা-খাওয়া, প্রাথমিক চিকিত্সাসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা দেবে। চাকরিতে যোগদানের বিমানভাড়া এবং চাকরি শেষে দেশে ফেরার বিমানভাড়া নিয়োগকারী কোম্পানি বহন করবে। এমনকি যাওয়ার সময় সার্ভিস চার্জ দেওয়া অর্থও কোম্পানি তিনমাস পর ফেরত দেবে।

যোগাযোগ
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য

  • বোয়েসেল অফিস, প্রবাসী কল্যাণ ভবন (পঞ্চম তলা), ৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ঢাকা।
  • বাংলাদেশ-জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, মিরপুর-২, ঢাকা।
  • বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দারুস সালাম রোড, মিরপুর-১, ঢাকা।

এছাড়াও বোয়েসেল অফিসের ওয়েব সাইট নোটিস থেকে জানতে পারবেন http://www.boesl.org.bd/NoticeBoardView.aspx

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.