মানসিক রোগের অদ্যপন্ত

মানসিক রোগ সম্বন্ধে ধারণাঃ

মানসিক রোগ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক রোগ হল, একজন ব্যক্তির সুস্থভাবে চিন্তা করতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সঠিকভাবে আচরণ করতে না পারা। এই অবস্থা প্রায়ই একজন ব্যক্তির অন্যদের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার এবং জীবনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে।

মানসিক রোগ কোনো ব্যক্তিগত দুর্বলতা অথবা চারিত্রিক ত্রুটির ফল নয়
ব্যক্তি-বিশেষ এবং অসুস্থতা ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে রোগের লক্ষণ হয়তো ভিন্ন হতে পারে। লিঙ্গ, বয়স, সংস্কৃতি, জাতি, ধর্ম অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই এতে আক্রান্ত হতে পারে। মানসিক রোগ কোনো ব্যক্তিগত দুর্বলতা অথবা চারিত্রিক ত্রুটির ফল নয়। উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যক্তি-বিশেষদের চিকিৎসা সম্ভব এবং তারা এক ফলপ্রসূ ও আনন্দময় জীবন কাটাতে পারে।

মানসিক রোগের শুরু যেভাবেঃ

বাংলাদেশে সাড়ে তিন কোটির বেশি মানসিক রোগী৷ দরিদ্রতা, পারিবারিক অশান্তি , কর্মসংস্থান ও ধর্মীয় শাসনের অভাবের মতো আরো বিষয়কে মনের অসুখ হওয়ার নানা কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফেসবুক পাতায় আমাদের পাঠকরা ৷
চিকিত্‍সকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বাংলাদেশে যারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হন, তাদের একটি অংশ আক্রান্ত হন বায়োলজিক্যাল এবং জেনেটিক কারণে৷ কিন্তু বড় একটি অংশ আক্রান্ত হন পারিবারিক এবং সামাজিক কারণে৷ নানা চাপ, দারিদ্র্য, সামাজিক এবং পারিবারিক অসঙ্গতি এর অন্যতম কারণ ৷

মানসিক রোগের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াঃ

“মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তা ও ভয়ের অনুভূতির ফলে কোনো কোনো কাজ করা অসম্ভব বলে মনে হয় আর কখনো কখনো আমি পড়তে বসেও ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারি না। অন্যান্য সময়ে আমি এতটাই অবসাদে ডুবে থাকি যে, কারো সঙ্গে কথা বলতে চাই না, এমনকী ভালো বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও না। কেউ কেউ আমাকে সাহায্য করার জন্য সান্ত্বনা দেয় যে, শীঘ্র সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে কিংবা আমার পরিস্থিতি ততটাও খারাপ নয়। অন্যেরা আমাকে ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতে বলে। কিন্তু, আমি কত বার তা করার চেষ্টা করেছি! যদিও ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই এই ধরনের মন্তব্যগুলো করা হয়, তবুও এটা আমার মধ্যে কোনো কিছু না করতে পারার অনুভূতি, অপরাধবোধ এবং ব্যর্থতার অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে দেয়।”

মানসিক রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করাঃ

১. দক্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করান। *
২. এক ভারসাম্যপূর্ণ ও স্থায়ী দৈনন্দিন তালিকা মেনে চলুন।
৩. কাজে ব্যস্ত থাকুন।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান।
৫. আরাম করার জন্য সময় করে নিন।
৬. পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খান।
৭. মদ্যপান করা এবং যে-নেশাকর ওষুধ আপনাকে গ্রহণ করতে বলা হয়নি, সেগুলো গ্রহণ করা কমান।
৮. নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে নেবেন না; সেই লোকেদের সঙ্গে সময় কাটান, যাদেরকে আপনি বিশ্বাস করেন এবং যারা আপনার যত্ন নেয়।
৯. আপনার আধ্যাত্মিক প্রয়োজনের প্রতি মনোযোগ দিন।

মানসিক রোগের কারনগুলো কি ?

১। প্রচণ্ড পরিমানে পারিবারিক অশান্তি, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
২। ব্যাক্তিগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে দুশ্চিন্তা, দ্বিধাদ্বন্দ্ব হতে মানসিক রোগ হতে পারে।
৩। অনেক ক্ষেত্রে বংশগত কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
৪। শারীরিক কারনেও মানসিক রোগ হতে পারে। যেমনঃ
শারীরিক দুর্বলতা,
টাইফয়েট,
সিফলিস,
মাথায় আঘাতজনিত প্রদাহ
অল্প বয়সে পুষ্টিহীনতা
ভিটামিনের অভাব
বিষক্রিয়া
বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে মানসিক রোগ হতে পারে।

মানসিক রোগের লক্ষনঃ

১। অতি উত্তেজনাঃ
অতি চঞ্চলতা, প্রলাপ বকা, বিক্ষুব্ধ অথবা আক্রমানত্তক আচরন, জিনিসপত্র ভাংচুর করা ইত্যাদি মানসিক রোগের লক্ষণ।
২। উদাসীনতাঃ
হটাত চুপ হয়ে যাওয়া, সময়মত না খাওয়া, একা একা বির বির করে কথা বলা, কোন কারন ছাড়াই নিজে নিজে হাসা ইত্যাদি মানসিক রোগের লক্ষণ হতে পারে।
৩। অশান্তি/অবসাদঃ
বিষণ্ণতা, কোন কিছু ভাল না লাগা, অস্থিরতা, অনিদ্রা, হাত পা মাথা জ্বালা পড়া করা, নিজেকে অসহায় মনে করা, আত্মহত্যার প্রবনতা থাকা, বুক ধরপাকড় করা, অনেক সময় স্নায়ুবিক দুর্বলতাও থাকতে পারে।
৪। যৌন দুর্বলতাঃ
বিভিন্ন সময় যৌন দুর্বলতা অনেক অশান্তির কারন হয়। অনেক সময় অনেকেই এই বিষয়ে অনেক ভয়ে থাকে যা সমস্যাকে অনেক জটিল করে তোলে। কুসংস্কার এবং ভুল ধারনা থেকে একসময় মানসিক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
উপরোক্ত লক্ষণগুলো ছাড়াও আরও বেশকিছু লক্ষণ আছে, এজন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। মনে রাখবেন অন্যান্ন রোগের মতই মানসিক রোগও একটি রোগ সুচিকিৎসায় এই রোগ পুরো ভাল হতে পারে।

মানসিক রোগের চিকিৎসাঃ

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা সফলভাবে অনেক মানসিক রোগের চিকিৎসা করতে পারেন। তাই, প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল, কোনো অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে সম্পূর্ণ চেক আপ করানো।

মানসিক রোগগ্রস্ত একজন মহিলা একজন অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলছেন
কিন্তু, মানসিক রোগীরা কেবলমাত্র তখনই এই বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে উপকার লাভ করতে পারবে, যখন তারা উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করবে। এর জন্য হয়তো সেই রোগীকে নিজের মানসিক রোগ সম্বন্ধে অন্যদের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে অনিচ্ছাকে দূর করতে হবে। চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, এমন মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা, যারা তাদেরকে তাদের রোগ সম্বন্ধে বুঝতে, দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা সমাধান করতে এবং চিকিৎসা বন্ধ না করার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে সাহায্য করতে পারেন। ডাক্তারের সঙ্গে এই ধরনের আলোচনার সময় পরিবারের কোনো সদস্য অথবা বন্ধু আশ্বাস ও সমর্থন জোগানোর ক্ষেত্রে এক বড়ো ভূমিকা পালন করতে পারেন।

অনেকে তাদের অবস্থাকে ভালোভাবে বোঝার এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করার পর, তাদের মানসিক রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। আগে উল্লেখিত মার্ক বলেন, “আমার স্ত্রীর রোগ ধরা পড়ার আগে মানসিক রোগ সম্বন্ধে আমরা প্রায় কিছুই জানতাম না। কিন্তু, আমরা এক এক করে প্রতিটা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এবং পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, আমরা নির্ভরযোগ্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সেইসঙ্গে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সমর্থন থেকে অনেক উপকার পেয়েছি।”

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ক্লডিয়াও স্বীকার করেন, “চিকিৎসার কারণে মনে হতো আমার সমস্ত স্বাধীনতা হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, আমার অসুস্থতা যদিও আমাদের কিছুটা সীমাবদ্ধ করে ফেলেছিল, তবুও আমি শিখেছি যে, আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব বলে মনে হয় এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তাই, আমার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যারা সাহায্য করেছে, তাদের কাছে থেকে সহযোগিতা লাভ করার মাধ্যমে, অন্যদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও উন্নত করার মাধ্যমে এবং এক এক করে সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করার মাধ্যমে আমি আমার মানসিক রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করি।”

প্রয়োজন বন্ধু ও পরিবারের সমর্থনঃ

মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদকাসক্তিকে কীভাবে মোকাবিলা করবে তা বুঝে উঠতে পারে না তারা ৷ এ ক্ষেত্রে প্রথম বাধা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ ও অবিশ্বাস৷ পরিবারের সদস্যদের মাদকাসক্তি থেকে সেরে ওঠতে থাকা ব্যক্তির ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে৷মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে মতামত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে ৷ আলাপচারিতার পরিবেশ সহজ রাখতে হবে৷ কোনো ভালো কাজের দায়িত্ব তাকে দিতে হবে৷ মন খুলে তার কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে৷ এ অবস্থায় তার সঠিক খাবারের প্রতি নজর দিতে হবে৷ সুষম খাবার, পানি এবং মনোচিকিত্‌সকের পরামর্শমতো নিয়মিত ওষুধ সেবনের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে দৃঢ় মনোভাবের পরিচয় দিতে হবে৷ তার ব্যক্তিগত দাবি পূরণের ব্যাপারে সংযত হতে হবে৷ তার হাতে যেন টাকা-পয়সা সহজে চলে না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ৷

শিক্ষকদের ভূমিকাঃ

মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের পরিস্কার ধারণা দিয়ে সতর্ক করে দিতে পারেন ৷ কারণ এ বয়সে অনেকরই মাদকের কুফল সম্পর্কে ধারনা থাকে না ৷ মাদকাসক্তি থেকে সদ্য সেরে ওঠা ব্যক্তিকে সামাজিক দক্ষতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং চাপ সামলানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় আসক্ত হওয়ার পথ বন্ধ করতে হবে৷প্রতিবছর ২৬ জুন বিশ্বমাদক বিরোধী দিবস পালন করা হয়৷ ১ঌ৮৭ সাল থেকে শুরু করে ২৩টি দেশকে সঙ্গে নিয়ে এই দিনের যাত্রা শুরু হয়েছিল৷ আজ বিশ্বব্যাপী এই দিনটিকে মাদকবিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে৷ আমাদের দেশেও বেশ ঘটা করে এই দিনটিকে পালন করা হচ্ছে৷এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের এই দেশে মাদকদ্রব্য গ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ এবং প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে৷ এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হচ্ছে নারী৷ প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য বেচা-কেনা হয়৷ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের তরুণ সমাজ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের দেশ৷ তাই অবিলম্বে মাদকের সর্বনাশা ছোবল থেকে বঁাচাতে হবে আমাদের তরুণ সমাজকে৷ তাহলেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে৷ তাই শুধু বছরের একটি দিন নয়৷ প্রতিটি দিনই হবে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার আন্দোলনের দিন এবং এই কাজটি করতে পরিবার, সমাজ, জাতি তথা গোটা দেশকে এবং এটি করতে হবে আমাদের নিজের স্বার্থেই৷ তবেই সুফল পাবে গোটা জাতি ৷

বিরল কিছু মানসিক রোগঃ

জেনিটাল রেট্রাকসন সিনড্রম – ছেলে রোগীর মনে হয় তার যৌনাঙ্গটি আসতে আসতে ছোট হয়ে যাচ্ছে এবং এক সময় সেটা তার শরীরের ভিতরে হারিয়ে যাবে আর মেয়ে রোগীর ক্ষেত্রে তারা ধারণা করে যে তাদের বুক আস্তে আস্তে সমান হয়ে যাচ্ছে ৷
ফিয়ার অফ নাম্বারস – অনেকেই ১৩ নাম্বার কে ভয় পায়৷ এর মাঝে আডল্ফ হিটলার ও ছিলেন ৷ তবে এশিয়াতে বেশি দেখা যায় ৪ নাম্বার নিয়ে ভীতি ৷
স্টেনডাল সিনড্রম – এক্ষেত্রে কোনো খুব সুন্দর দৃশ্য বা খুব সুন্দর একটা পেইনটিং বা কোনো ঐতিহাসিক স্থাপনার সামনে গেলে দেখা যায় হঠাত করে মাথা ফাকা হয়ে যায়, মাথা ঘুরাতে থাকে৷ দম বন্ধ হয়ে আসে এবং অনেক সময় অজ্ঞান হতেও দেখা যায়৷ এক কোথায় সৌন্দর্য সহ্য করতে পারেনা ৷
কন্টার্ড ডেলিউসন বা ওয়াকিং ডেড সিনড্রম – রোগী এমনিতে স্বাভাবিক আচরণ করলেও একটু বেশি দুশ্চিন্তা বা হতাশ আসলেই তার মনে হতে থাকে সে মৃত এবং তার শরীরের ভিতরের সব পচে গেছে৷ সে একবার মারা গেছে তাই আর মরবে না এই চিন্তা থেকে অনেক সময় বিপদজনক কাজ করার চেষ্টা করে এবং অনিচ্ছাকৃত আত্মহত্যা করা হয়ে যায় ৷
স্টকহোম সিনড্রম – এটা লিমা সিনড্রম এর উল্টোটা৷ যাকে অপহরণ করা হয়েছে সে অপহরণকারীর প্রতি যত্ন আর ভালবাসা দেখাতে শুরু করে৷ অনেক ক্ষেত্রেই অপহরণকারীকে এতটা বিশ্বাস করে যে তাকে সব রকমের সাহায্যও করে এমন কি তার সাথে এই কাজের একটা অংশ হয়ে যায় ৷
ফ্রেগলি ডিলিউসন – এটা কাপগ্রাস সিনড্রম এর উল্টো৷ এখানে রোগীর মনে হয় তার আসেপাশে যত লোক আছে তা একজন ই যে কিনা বিভিন্ন রূপ নিয়ে তার সামনে আসে ৷
রিডুপলিকেটিভ পারামনেসিয়া – এক্ষেত্রে রোগীর মনে হয় সে যে জায়গা টা দেখছে তা অন্য কোথাও একই ভাবে আছে বা অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হয়েছে৷ যেমন তাকে ঢাকায় একটা হসপিটাল এ ভর্তি করা হলো তার সবসময় মনে হবে এমন একটা হসপিটাল অন্য কোথাও একই ভাবে আছে বা হসপিটাল টা আসলে গাজীপুর এ আছে৷ এভাবে ভ্রান্ত ধারণার কারণে ভয় পেতে থাকে আর স্বাস্থ্য আরো খারাপ করে৷ যদি চিন্তা টা তার কর্মস্থল নিয়ে হয় তাহলে কাজ ও ঠিকমত করতে পারেনা ৷
সেলেব্রিফিলিয়া – কোনো সেলেব্রিটির অন্ধ ভক্তের সেই সেলেব্রিটি সাথে ভালবাসার সম্পর্ক বা শারীরিক সম্পর্ক করার ইচ্ছা এত তীব্র হয়ে যায় যে সে ওই সেলেব্রিটি কে নিয়ে ভাবতে ভাবতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৷
ট্রাইকটিলোমেনিয়া – অস্থিরতা বা হতাশার সময়ে নিজের ভ্রু বা মাথার চুল টেনে টেনে তোলার তীব্র ইচ্ছা৷ দেখা যায় যে তুলতে তুলতে মাথার এক জায়গায় চুল ই শেষ হয়ে গেছে৷ মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায় ৷
বয়েনথ্রপি – এই রোগ এ একজন নিজেকে গবাদি পশু ভাবতে শুরু করে৷অনেক ক্ষেত্রে ঘাস খেতে ও দেখা যায় ৷
এক্সপ্লোডিং হেড সিনড্রম – এই রোগ এ ঘুমানোর পর হঠাত মাথার ভিতরের কোনো বিকট(কারো চিত্কার বা কোনো কিছই ভাঙ্গার )শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়৷ স্বপ্নের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই৷ মুনশাউজেন সিনড্রম – ডাক্তার বা নার্স এর দৃষ্টি কেড়ে বেশি সেবা বা সময় পাওয়ার জন্য রোগীর বেশি বেশি অসুস্থতার ভান করা৷ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবশ্য এটাকে রোগ না বলে প্রয়োজন বলতে হবে ৷ কারণ টাকার ডাক্তার বা নার্সের কাছে একটু সেবা পাওয়া কষ্টকর ৷

আমার লিখা প্রথম ব্লগ ৷ অনেক কিছুই ভুল থাকতে পারে তাই ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে বা কিভাবে আরো ভালো করে লিখা যাবে তা বললে ভালো হয় ৷ সবাই মানসিক অস্থিরতা থেকে দুরে থাকবেন এটাই কামনা ৷

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.