টিউশনি শুধু টাকার জন্যই না,এতে আছে আনন্দ ও শিক্ষা

টিউশনিতে গেলাম পড়াচ্ছি,

স্টুডেন্টের পিচ্চি ছোট ভাই আসছে হাতে চকোলেট নিয়ে।এসে আমাকে বলতেছে, কাও এটা তুমি কাও। কয়েকবার না করলাম।তাও শুনেনা।পিচ্চিটায় চকোলেট আমার মুখে লাগিয়ে আবারো বলতেছে কাও।আমার মুখ মেখে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে হা করে খেয়ে নিলাম।না খেলে মুখ নোংরা করে ফেলত আমি শিওর!😣

চকোলেট চিবুচ্ছি আর পড়া দেখিয়ে দিচ্ছি।খাওয়া শেষ।পিচ্চির মুখের দিকে চেয়ে দেখি ওর চোখের পানি টলমল করতেছে।পিচ্চিটা ২হাত দিয়ে আমার মুখ ফাকা করার চেষ্টা করতেছে। কি বিরক্তিকর অবস্থা! না খেলেও জালা,খেয়েছি তাতেও জালা!😰

নিজেই হা করলাম।ও মুখের ভিতরে তাকিয়ে দেখে চকোলেট নাই।মানে খেয়ে ফেলছি। ওর বোঝতে দেরি ভ্যাএএএএ করে কান্না করতে দেরি নাই। 
পাশের রুম থেকে স্টুর মা বলতেছে কি হইছেরে রাফি(আমার ছাত্র)? নাফি কান্দে কেন?😷

স্টুডেন্ট ডাইরেক্ট বলে দিছে, স্যার নাফির চকোলেট খেয়ে ফেলছে।এই কথা শুনে মনে হল চকোলেট না আমি বিষ খাইছি। কি লজ্জার ব্যপার।স্টুডেন্টের আম্মু এসে পিচ্চিটাকে নিয়ে গেল।কান্নার শব্দ বেড়েই যাচ্ছে।স্টুডেন্টের দাদ,দাদি পাশের রুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেছে কি হইছে দাদা ভাই? স্টুডেন্টের আম্মু বলে দিল নাফির চকোলেট স্যার খেয়ে ফেলছে।এই কথা শুনে নিজেকে তখন ফাসির আসামি মনে হচ্ছিল।😑

এরপর আসছে স্টুর কলেজ পড়ুয়া ফুপ্পি।সেও জেনে গেল ‘নাফির চকোলেট স্যার খেয়ে ফেলছে’। নিজেকে তখন বিরাট মাপের অপরাধী মনে হতে লাগল।😑

এরপর আসছে কাজের মহিলা।সেও জেনে গেল ‘স্যার নাফির চকোলেট খেয়ে ফেলছে’। কাজের মহিলা তো বলেই ফেলল ‘কাইন্দোনা বাবু,স্যারকে মাইর দিমু’। এই কথা শুনে ঐ বাড়িতে থাকতেও পারতেছিলাম না বের হতেও পারছিলাম না।😑

কাজের মহিলা নাফিকে কুলে করে নিয়ে দোকানে যাচ্ছে।নাফি তখনও কাদতেছে।রাস্তায় কেউ জিজ্ঞেস করবে নাফি কান্দে ক্যা? কাজের মহিলা বলবে স্যার নাফির চকোলেট খেয়ে ফেলছে।আরো লোকের সাথে পথে দেখা হবে,তারাও জানতে চাইবে নাফি কান্দে ক্যা? এভাবে সারা এলাকা জেনে যাবে ‘স্যার নাফির চকোলেট খেয়ে ফেলছে’।🙏😑

©ফাহিম রানা ভাই
#খুব মজা পাইছি গল্পটা পড়ে।।



You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.