সাইকেল চালিয়ে ৩১৯ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ইজতেমায় বৃদ্ধ

বয়স এখন ৮১। পেছনের ১৪ টি বছর সাইকেল চালিয়ে গেছেন রাজশাহী। এবার ১৫ তম বছরেও একইভাবে নিজের বাইসাইকেলে রওনা হয়েছেন বাঁশদহার জয়নাল আবেদিন। রাজশাহীতে অনুষ্ঠেয় দুই দিনব্যাপী ইজতেমায় যোগ দিতে চান জয়নাল।গত রোববার ভোরে তিনি নিজের সাইকেলের হ্যান্ডেলে একটি ব্যানার টানিয়ে রওনা হয়েছেন। পথিমধ্যে কোনো সাথী তার সাথে যোগ দিলে তাকে স্বাগত জানাবেন তিনি। সাতক্ষীরা থেকে একরকম একাই রওনা হন তিনি।

জয়নালের সাথে রয়েছে বাড়িতে তৈরি করা বেশ কয়েকটি শুকনো রুটি, কিছু তরকারি ও স্যালাইন। জানালেন ‘আমার কোনো অসুখ বিসুখ নেই। তাই ওষুধ নেওয়ার দরকার নেই’। সড়ক পথে সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহীর দুরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার। নিজের শক্তি সাহস ও মনোবল দিয়েই তিনি পার হবেন এই সড়ক। পথিমধ্যে মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। রাত্রি যাপন করবেন কোনো মসজিদে। এভাবেই তিনি বুধবার কোনো এক সময় পৌছে যাবেন রাজশাহীতে নিজের গন্তব্যস্থলে।

১৯৩৮ এর জুন মাসে জন্ম জয়নাল আবেদিনের। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের কাওনডাঙ্গা গ্রামে বাড়ি তার। লেখাপড়া করেছেন নবম শ্রেণি পর্যন্ত। এখনও বেশ নির্ভুল ও স্পষ্ট ইংরাজীও বলতে পারেন। তিনি বিশ্বযুদ্ধের দামামা শুনেছেন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনও প্রত্যক্ষ করেছেন। বৃটিশকে ভারত ছাড়ো আন্দোলন দেখেছেন। ১৯৪৭ এ দেশ ভাগ দেখেছেন তিনি । পাঁচ ছেলে ও পাঁচ মেয়ের বাবা জয়নালের নাতি নাতিনের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে। তাদের নিয়ে বেশ সুখেই আছেন তিনি।

জয়নাল আবেদিন জানালেন একবার খুব সখ হয়েছিল রাজশাহী দেখার। দেখতে গিয়েছিলেনও । পরে সিদ্ধান্ত নেন যতদিন তিনি সুস্থ খাকবেন ততদিন সাইকেল চালিয়ে রাজশাহী আসবেন বছরে একবার করে। তিনি বলেন ২০০৪ সাল থেকে পরপর ১৩ বছর রাজশাহী এসেছি। এবার নিয়ে ১৪ বছর। সেখানে বৃহস্পতিবার শুরু হবে ইজতেমা। মোনাজাত শেষে শনিবার বাড়ির উদ্দেশ্যে আবারও সাইকেলে রওনা হবেন জয়নাল আবেদিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন জানান, সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ৩১৯ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিনদিন। একটি ফেরি পার হতে হবে তাকে। আগামী ১ মার্চ অনুষ্ঠানে তাবলীগ এজতেমায় অংশ গ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরবেন তিনি।

গত রোববার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা ছাড়েন তিনি। কোথায় রাত্রি যাপন করবেন জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন চলতি পথে কোনো না কোনো মসজিদে তিনি রাত্রি যাপন করবেন। শনিবার রাতে ঝিনাইদহর কোনো মসজিদে রাত্রি যাপন করবেন তিনি।

রোববার আবারও রওনা হয়ে পৌঁছাবেন লালন শাহ্ ব্রিজের অপর প্রান্তে পাবনা জেলার পাকশিতে। সোমবার ভোরে তিনি আবারও রওনা হয়ে পৌঁছাবেন রাজশাহীর চারঘাটে। এদিন তিনি তার গন্তব্যস্থল রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইজতেমার ময়দানে পৌঁছে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

জয়নাল আবেদিনের চলার পথে তার কোন সঙ্গী থাকছে না। তার কাছে রেখেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান কতৃক দেওয়া প্রত্যয়নপত্র, কিছু শুকনো খাবার, রুটি,পানি ও স্যালাইন ছাড়াও ব্যথার ঔষধ। সাইকেলে হাওয়া দেওয়ার পাম্পারটিও রয়েছে তার কাছে। সাইকেলের হ্যান্ডেলে লাগিয়েছেন একটি 

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.