সূরা হিজর
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
الَرَ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَقُرْآنٍ مُّبِينٍ
আলিফ-লা-ম-রা; এগুলো পরিপূর্ণ গ্রন্থ ও সুস্পষ্ট কোরআনের আয়াত।(সূরা হিজর ১৫:১ )
رُّبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ كَانُواْ مُسْلِمِينَ
কোন সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত।(সূরা হিজর ১৫:২ )
ذَرْهُمْ يَأْكُلُواْ وَيَتَمَتَّعُواْ وَيُلْهِهِمُ الأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
আপনি ছেড়ে দিন তাদেরকে, খেয়ে নিক এবং ভোগ করে নিক এবং আশায় ব্যাপৃত থাকুক। অতি সত্বর তারা জেনে নেবে।(সূরা হিজর ১৫:৩ )
وَمَا أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلاَّ وَلَهَا كِتَابٌ مَّعْلُومٌ
আমি কোন জনপদ ধবংস করিনি; কিন্ত তার নির্দিষ্ট সময় লিখিত ছিল।(সূরা হিজর ১৫:৪ )
مَّا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ
কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট সময়ের অগ্রে যায় না এবং পশ্চাতে থাকে না।(সূরা হিজর ১৫:৫ )
وَقَالُواْ يَا أَيُّهَا الَّذِي نُزِّلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌ
তারা বললঃ হে ঐ ব্যক্তি, যার প্রতি কোরআন নাযিল হয়েছে, আপনি তো একজন উম্মাদ।(সূরা হিজর ১৫:৬ )
لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِالْمَلائِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
যদি আপনি সত্যবাদী হন, তবে আমাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে আনেন না কেন?(সূরা হিজর ১৫:৭ )
مَا نُنَزِّلُ الْمَلائِكَةَ إِلاَّ بِالحَقِّ وَمَا كَانُواْ إِذًا مُّنظَرِينَ
আমি ফেরেশতাদেরকে একমাত্র ফায়সালার জন্যেই নাযিল করি। তখন তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবে না।(সূরা হিজর ১৫:৮ )
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।(সূরা হিজর ১৫:৯ )
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِي شِيَعِ الأَوَّلِينَ
আমি আপনার পূর্বে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল প্রেরণ করেছি।(সূরা হিজর ১৫:১০ )
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلاَّ كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
ওদের কাছে এমন কোন রসূল আসেননি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করতে থাকেনি।(সূরা হিজর ১৫:১১ )
كَذَلِكَ نَسْلُكُهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ
এমনিভাবে আমি এ ধরনের আচরণ পাপীদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেই।(সূরা হিজর ১৫:১২ )
لاَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الأَوَّلِينَ
ওরা এর প্রতি বিশ্বাস করবে না। পূর্ববর্তীদের এমন রীতি চলে আসছে।(সূরা হিজর ১৫:১৩ )
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاء فَظَلُّواْ فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণ ও করতে থাকে।(সূরা হিজর ১৫:১৪ )
لَقَالُواْ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
তবুও ওরা একথাই বলবে যে, আমাদের দৃষ্টির বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে না বরং আমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।(সূরা হিজর ১৫:১৫ )
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ
নিশ্চয় আমি আকাশে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছি এবং তাকে দর্শকদের জন্যে সুশোভিত করে দিয়েছি।(সূরা হিজর ১৫:১৬ )
وَحَفِظْنَاهَا مِن كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি।(সূরা হিজর ১৫:১৭ )
إِلاَّ مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُّبِينٌ
কিন্তু যে চুরি করে শুনে পালায়, তার পশ্চাদ্ধাবন করে উজ্জ্বল উল্কাপিন্ড।(সূরা হিজর ১৫:১৮ )
وَالأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَيْءٍ مَّوْزُونٍ
আমি ভু-পৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি।(সূরা হিজর ১৫:১৯ )
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُ بِرَازِقِينَ
আমি তোমাদের জন্যে তাতে জীবিকার উপকরন সৃষ্টি করছি এবং তাদের জন্যেও যাদের অন্নদাতা তোমরা নও।(সূরা হিজর ১৫:২০ )
وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلاَّ بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ
আমার কাছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি।(সূরা হিজর ১৫:২১ )
وَأَرْسَلْنَا الرِّيَاحَ لَوَاقِحَ فَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَسْقَيْنَاكُمُوهُ وَمَا أَنتُمْ لَهُ بِخَازِنِينَ
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু পরিচালনা করি অতঃপর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, এরপর তোমাদেরকে তা পান করাই। বস্তুতঃ তোমাদের কাছে এর ভান্ডার নেই।(সূরা হিজর ১৫:২২ )
وَإنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ
আমিই জীবনদান করি, মৃত্যুদান করি এবং আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।(সূরা হিজর ১৫:২৩ )
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ
আমি জেনে রেখেছি তোমাদের অগ্রগামীদেরকে এবং আমি জেনে রেখেছি পশ্চাদগামীদেরকে।(সূরা হিজর ১৫:২৪ )
وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ إِنَّهُ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
আপনার পালনকর্তাই তাদেরকে একত্রিত করে আনবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানময়।(সূরা হিজর ১৫:২৫ )
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإِنسَانَ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আমি মানবকে পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুস্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি।(সূরা হিজর ১৫:২৬ )
وَالْجَآنَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ السَّمُومِ
এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা সৃজিত করেছি।(সূরা হিজর ১৫:২৭ )
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির পত্তন করব।(সূরা হিজর ১৫:২৮ )
فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُواْ لَهُ سَاجِدِينَ
অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফঁুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো।(সূরা হিজর ১৫:২৯ )
فَسَجَدَ الْمَلآئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ
তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল।(সূরা হিজর ১৫:৩০ )
إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى أَن يَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
কিন্তু ইবলীস-সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হল না।(সূরা হিজর ১৫:৩১ )
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا لَكَ أَلاَّ تَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
আল্লাহ বললেনঃ হে ইবলিস, তোমার কি হলো যে তুমি সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হলে না?(সূরা হিজর ১৫:৩২ )
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
বললঃ আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরী ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।(সূরা হিজর ১৫:৩৩ )
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ
আল্লাহ বললেনঃ তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত।(সূরা হিজর ১৫:৩৪ )
وَإِنَّ عَلَيْكَ اللَّعْنَةَ إِلَى يَوْمِ الدِّينِ
এবং তোমার প্রতি ন্যায় বিচারের দিন পর্যন্ত অভিসম্পাত।(সূরা হিজর ১৫:৩৫ )
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।(সূরা হিজর ১৫:৩৬ )
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ তোমাকে অবকাশ দেয়া হল।(সূরা হিজর ১৫:৩৭ )
إِلَى يَومِ الْوَقْتِ الْمَعْلُومِ
সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।(সূরা হিজর ১৫:৩৮ )
قَالَ رَبِّ بِمَا أَغْوَيْتَنِي لأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِي الأَرْضِ وَلأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
সে বললঃ হে আমার পলনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথ ভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথ ভ্রষ্ঠ করে দেব।(সূরা হিজর ১৫:৩৯ )
إِلاَّ عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
আপনার মনোনীত বান্দাদের ব্যতীত।(সূরা হিজর ১৫:৪০ )
قَالَ هَذَا صِرَاطٌ عَلَيَّ مُسْتَقِيمٌ
আল্লাহ বললেনঃ এটা আমা পর্যন্ত সোজা পথ।(সূরা হিজর ১৫:৪১ )
إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ إِلاَّ مَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْغَاوِينَ
যারা আমার বান্দা, তাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রান্তদের মধ্য থেকে যারা তোমার পথে চলে।(সূরা হিজর ১৫:৪২ )
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِينَ
তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম।(সূরা হিজর ১৫:৪৩ )
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِّكُلِّ بَابٍ مِّنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُومٌ
এর সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্যে এক একটি পৃথক দল আছে।(সূরা হিজর ১৫:৪৪ )
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
নিশ্চয় খোদাভীরুরা বাগান ও নির্ঝরিনীসহূহে থাকবে।(সূরা হিজর ১৫:৪৫ )
ادْخُلُوهَا بِسَلاَمٍ آمِنِينَ
বলা হবেঃ এগুলোতে নিরাপত্তা ও শান্তি সহকরে প্রবেশ কর।(সূরা হিজর ১৫:৪৬ )
وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ
তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দেব। তারা ভাই ভাইয়ের মত সামনা-সামনি আসনে বসবে।(সূরা হিজর ১৫:৪৭ )
لاَ يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُم مِّنْهَا بِمُخْرَجِينَ
সেখানে তাদের মোটেই কষ্ট হবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিস্কৃত হবে না।(সূরা হিজর ১৫:৪৮ )
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল দয়ালু।(সূরা হিজর ১৫:৪৯ )
وَ أَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الأَلِيمَ
এবং ইহাও যে, আমার শাস্তিই যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।(সূরা হিজর ১৫:৫০ )
وَنَبِّئْهُمْ عَن ضَيْفِ إِ بْراَهِيمَ
আপনি তাদেরকে ইব্রাহীমের মেহমানদের অবস্থা শুনিয়ে দিন।(সূরা হিজর ১৫:৫১ )
إِذْ دَخَلُواْ عَلَيْهِ فَقَالُواْ سَلامًا قَالَ إِنَّا مِنكُمْ وَجِلُونَ
যখন তারা তাঁর গৃহে আগমন করল এবং বললঃ সালাম। তিনি বললেনঃ আমরা তোমাদের ব্যাপারে ভীত।(সূরা হিজর ১৫:৫২ )
قَالُواْ لاَ تَوْجَلْ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلامٍ عَلِيمٍ
তারা বললঃ ভয় করবেন না। আমরা আপনাকে একজন জ্ঞানবান ছেলে-সন্তান ের সুসংবাদ দিচ্ছি।(সূরা হিজর ১৫:৫৩ )
قَالَ أَبَشَّرْتُمُونِي عَلَى أَن مَّسَّنِيَ الْكِبَرُ فَبِمَ تُبَشِّرُونَ
তিনি বললেনঃ তোমরা কি আমাকে এমতাবস্থায় সুসংবাদ দিচ্ছ, যখন আমি বার্ধক্যে পৌছে গেছি ?(সূরা হিজর ১৫:৫৪ )
قَالُواْ بَشَّرْنَاكَ بِالْحَقِّ فَلاَ تَكُن مِّنَ الْقَانِطِينَ
তারা বললঃ আমরা আপনাকে সত্য সু-সংবাদ দিচ্ছি! অতএব আপনি নিরাশ হবেন না।(সূরা হিজর ১৫:৫৫ )
قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِ إِلاَّ الضَّآلُّونَ
তিনি বললেনঃ পালনকর্তার রহমত থেকে পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে নিরাশ হয় ?(সূরা হিজর ১৫:৫৬ )
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
তিনি বললেনঃ অতঃপর তোমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কি হে আল্লাহর প্রেরিতগণ ?(সূরা হিজর ১৫:৫৭ )
قَالُواْ إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বললঃ আমরা একটি অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।(সূরা হিজর ১৫:৫৮ )
إِلاَّ آلَ لُوطٍ إِنَّا لَمُنَجُّوهُمْ أَجْمَعِينَ
কিন্তু লূতের পরিবার-পরিজ ন। আমরা অবশ্যই তাদের সবাইকে বাঁচিয়ে নেব।(সূরা হিজর ১৫:৫৯ )
إِلاَّ امْرَأَتَهُ قَدَّرْنَا إِنَّهَا لَمِنَ الْغَابِرِينَ
তবে তার স্ত্রী। আমরা স্থির করেছি যে, সে থেকে যাওয়াদের দলভূক্ত হবে।(সূরা হিজর ১৫:৬০ )
فَلَمَّا جَاء آلَ لُوطٍ الْمُرْسَلُونَ
অতঃপর যখন প্রেরিতরা লূতের গৃহে পৌছল।(সূরা হিজর ১৫:৬১ )
قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
তিনি বললেনঃ তোমরা তো অপরিচিত লোক।(সূরা হিজর ১৫:৬২ )
قَالُواْ بَلْ جِئْنَاكَ بِمَا كَانُواْ فِيهِ يَمْتَرُونَ
তারা বললঃ না বরং আমরা আপনার কাছে ঐ বস্তু নিয়ে এসেছি, যে সম্পর্কে তারা বিবাদ করত।(সূরা হিজর ১৫:৬৩ )
وَأَتَيْنَاكَ بَالْحَقِّ وَإِنَّا لَصَادِقُونَ
এবং আমরা আপনার কাছে সত্য বিষয় নিয়ে এসেছি এবং আমরা সত্যবাদী।(সূরা হিজর ১৫:৬৪ )
فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ اللَّيْلِ وَاتَّبِعْ أَدْبَارَهُمْ وَلاَ يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ وَامْضُواْ حَيْثُ تُؤْمَرُونَ
অতএব আপনি শেষরাত্রে পরিবারের সকলকে নিয়ে চলে যান এবং আপনি তাদের পশ্চাদনুসরণ করবেন না এবং আপনাদের মধ্যে কেউ যেন পিছন ফিরে না দেখে। আপনারা যেখানে আদেশ প্রাপ্ত হচ্ছেন সেখানে যান।(সূরা হিজর ১৫:৬৫ )
وَقَضَيْنَا إِلَيْهِ ذَلِكَ الأَمْرَ أَنَّ دَابِرَ هَؤُلاء مَقْطُوعٌ مُّصْبِحِينَ
আমি লূতকে এ বিষয় পরিজ্ঞাত করে দেই যে, সকাল হলেই তাদেরকে সমুলে বিনাশ করে দেয়া হবে।(সূরা হিজর ১৫:৬৬ )
وَجَاء أَهْلُ الْمَدِينَةِ يَسْتَبْشِرُونَ
শহরবাসীরা আনন্দ-উল্লা স করতে করতে পৌছল।(সূরা হিজর ১৫:৬৭ )
قَالَ إِنَّ هَؤُلاء ضَيْفِي فَلاَ تَفْضَحُونِ
লূত বললেনঃ তারা আমার মেহমান। অতএব আমাকে লাঞ্ছিত করো না।(সূরা হিজর ১৫:৬৮ )
وَاتَّقُوا اللّهَ وَلاَ تُخْزُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার ইযযত নষ্ট করো না।(সূরা হিজর ১৫:৬৯ )
قَالُوا أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ الْعَالَمِينَ
তার বললঃ আমরা কি আপনাকে জগৎদ্বাসীর সমর্থন করতে নিষেধ করিনি।(সূরা হিজর ১৫:৭০ )
قَالَ هَؤُلاء بَنَاتِي إِن كُنتُمْ فَاعِلِينَ
তিনি বললেনঃ যদি তোমরা একান্ত কিছু করতেই চাও, তবে আমার কন্যারা উপস্থিত আছে।(সূরা হিজর ১৫:৭১ )
لَعَمْرُكَ إِنَّهُمْ لَفِي سَكْرَتِهِمْ يَعْمَهُونَ
আপনার প্রাণের কসম, তারা আপন নেশায় প্রমত্ত ছিল।(সূরা হিজর ১৫:৭২ )
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ
অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তাদেরকে প্রচন্ড একটি শব্দ এসে পাকড়াও করল।(সূরা হিজর ১৫:৭৩ )
فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ
অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর কঙ্করের প্রস্থর বর্ষণ করলাম।(সূরা হিজর ১৫:৭৪ )
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِينَ
নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।(সূরা হিজর ১৫:৭৫ )
وَإِنَّهَا لَبِسَبِيلٍ مُّقيمٍ
জনপদটি সোজা পথে অবস্থিত রয়েছে।(সূরা হিজর ১৫:৭৬ )
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّلْمُؤمِنِينَ
নিশ্চয় এতে ঈমানদারদের জন্যে নিদর্শণ আছে।(সূরা হিজর ১৫:৭৭ )
وَإِن كَانَ أَصْحَابُ الأَيْكَةِ لَظَالِمِينَ
নিশ্চয় গহীন বনের অধিবাসীরা পাপী ছিল।(সূরা হিজর ১৫:৭৮ )
فَانتَقَمْنَا مِنْهُمْ وَإِنَّهُمَا لَبِإِمَامٍ مُّبِينٍ
অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। উভয় বস্তি প্রকাশ্য রাস্তার উপর অবস্থিত।(সূরা হিজর ১৫:৭৯ )
وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَابُ الحِجْرِ الْمُرْسَلِينَ
নিশ্চয় হিজরের বাসিন্দারা পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে।(সূরা হিজর ১৫:৮০ )
وَآتَيْنَاهُمْ آيَاتِنَا فَكَانُواْ عَنْهَا مُعْرِضِينَ
আমি তাদেরকে নিজের নিদর্শনাবলী দিয়েছি। অতঃপর তারা এগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।(সূরা হিজর ১৫:৮১ )
وَكَانُواْ يَنْحِتُونَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا آمِنِينَ
তারা পাহাড়ে নিশ্চিন্তে ঘর খোদাই করত।(সূরা হিজর ১৫:৮২ )
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ
অতঃপর এক প্রত্যুষে তাদের উপর একটা শব্দ এসে আঘাত করল।(সূরা হিজর ১৫:৮৩ )
فَمَا أَغْنَى عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
তখন কোন উপকারে আসল না যা তারা উপার্জন করেছিল।(সূরা হিজর ১৫:৮৪ )
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلاَّ بِالْحَقِّ وَإِنَّ السَّاعَةَ لآتِيَةٌ فَاصْفَحِ الصَّفْحَ الْجَمِيلَ
আমি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী যা আছে তা তাৎপর্যহীন সৃষ্টি করিনি। কেয়ামত অবশ্যই আসবে। অতএব পরম ঔদাসীন্যের সাথে ওদের ক্রিয়াকর্ম উপক্ষো করুন।(সূরা হিজর ১৫:৮৫ )
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْخَلاَّقُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।(সূরা হিজর ১৫:৮৬ )
وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنَ الْعَظِيمَ
আমি আপনাকে সাতটি বার বার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কোরআন দিয়েছি।(সূরা হিজর ১৫:৮৭ )
لاَ تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
আপনি চক্ষু তুলে ঐ বস্তুর প্রতি দেখবেন না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি, তাদের জন্যে চিন্তিত হবেন না আর ঈমানদারদের জন্যে স্বীয় বাহু নত করুন।(সূরা হিজর ১৫:৮৮ )
وَقُلْ إِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْمُبِينُ
আর বলুনঃ আমি প্রকাশ্য ভয় প্রদর্শক।(সূরা হিজর ১৫:৮৯ )
كَمَا أَنزَلْنَا عَلَى المُقْتَسِمِينَ
যেমন আমি নাযিল করেছি যারা বিভিন্ন মতে বিভক্ত তাদের উপর।(সূরা হিজর ১৫:৯০ )
الَّذِينَ جَعَلُوا الْقُرْآنَ عِضِينَ
যারা কোরআনকে খন্ড খন্ড করেছে।(সূরা হিজর ১৫:৯১ )
فَوَرَبِّكَ لَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ
অতএব আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই ওদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।(সূরা হিজর ১৫:৯২ )
عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
ওদের কাজকর্ম সম্পর্কে।(সূরা হিজর ১৫:৯৩ )
فَاصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
অতএব আপনি প্রকাশ্যে শুনিয়ে দিন যা আপনাকে আদেশ করা হয় এবং মুশরিকদের পরওয়া করবেন না।(সূরা হিজর ১৫:৯৪ )
إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِئِينَ
বিদ্রুপকারীদের জন্যে আমি আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট।(সূরা হিজর ১৫:৯৫ )
الَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ اللّهِ إِلـهًا آخَرَ فَسَوْفَ يَعْمَلُونَ
যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য সাব্যস্ত করে। অতএব অতিসত্তর তারা জেনে নেবে।(সূরা হিজর ১৫:৯৬ )
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ
আমি জানি যে আপনি তাদের কথাবর্তায় হতোদ্যম হয়ে পড়েন।(সূরা হিজর ১৫:৯৭ )
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
অতএব আপনি পালনকর্তার সৌন্দর্য স্মরণ করুন এবং সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যান।(সূরা হিজর ১৫:৯৮ )
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
এবং পালনকর্তার এবাদত করুন, যে পর্যন্ত আপনার কাছে নিশ্চিত কথা না আসে।(সূরা হিজর ১৫:৯৯ )